মিরু হাসান বাপ্পী, বগুড়া জেলা প্রতিনিধি:বগুড়ার সান্তাহারের পার্শ্ববর্তী নওগাঁর সড়ক ও জনপথের (সওজ) জায়গা কৌশলে দখল করে সেখানে গাছের গুল রেখে এখনও ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন ভাই ভাই ‘স’ মিলের স্বত্বাধিকারী শহিদুল ইসলাম। গত ২৫ সেপ্টেম্বর একাধিক শিরোনামে ওই ‘স’ মিলের বিরুদ্ধ বিভিন্ন জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
সংবাদ প্রকাশের কয়েকদিন পেরিয়ে গেলেও কোন পদক্ষেপ নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষরা। এতে করে কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন স্থানীয় লোকজন।এদিকে সংবাদ প্রকাশের পর ‘স’ মিলের স্বত্বাধিকারী শহিদুল ইসলাম গত ২৯ সেপ্টেম্বর আঞ্চলিক একটি পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ দেন।
তিনি প্রতিবাদে উল্লেখ করে বলেন, তার ব্যক্তিমালিকানা জায়গা ১২ শতক যেখানে বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এছাড়া বন বিভাগের কোন গাছ কাটেননি বা লাগানোই হয়নি বলে তার দাবি। তিনি আরও বলেন সওজের জায়গা দখল করেননি। সেটা ফাঁকা আছে।
অথচ শহিদুল ইসলাম সংবাদের প্রতিবাদ দেওয়ার পরেও এই সংবাদ লিখার পূর্ব মূহুর্তে সেখানে গিয়ে দেখা যায় সওজের জায়গায় ইটের খোয়া আছে এবং গাছের গুল স্তুপ করে সাজিয়ে রেখেছেন তিনি। এছাড়া সংবাদে তার ‘স’ মিল সম্পর্কে প্রকাশ করা হয়েছে। তার মোট সম্পত্তির পরিমাণ উল্লেখ করা হয়নি সংবাদে।
আবার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি বলেন, শহিদুলের ‘স’ মিল করার পূর্বে ২০১১ সালের দিকে সওজের জায়গায় দুপাশে বন বিভাগের গাছ লাগানো ছিলো। যার প্রমান হিসাবে এখনও ২-৩টা গাছ মরা অবস্থায় রয়েছে। তখন শহিদুল ‘স’ মিলে যাতাযাতের জন্য মাটি ফেলে ভরাট করতে লাগে।
তাহলে কি শহিদুল একসময় ব্যবসা করতে পারে এই ভেবে তার ব্যবসার সুবিধার্তে ওই ‘স’ মিলের সামনে কোন গাছ লাগানো হয়নি, সেই সময়? তাই দায়সারা সংবাদের প্রতিবাদ দিয়ে তিনি অবৈধকে বৈধ করার চেষ্টা করেছে এমনটাই বলছেন স্থানীয় লোকজন।
জানা যায়, পশ্চিম ঢাকারোড-নাটোর বাইপাস আঞ্চলিক সড়কের পাশে শহিদুল ইসলাম তার ব্যক্তিমালিকানা সম্পত্তির ৩ শতক জায়গায় গড়ে তুলেছেন ভাইভাই নামে একটি ‘স’ মিল। আর ওই মিলের সামনে সড়ক ও জনপথের (সওজের) প্রায় ১৫ শতক জায়গা ফাঁকা থাকায় সুযোগ নিয়েছেন তিনি। কৌশলে দখল করে গাছের গুল স্তুপ করে ফেলে রেখেছেন।
চালিয়ে যাচ্ছেন ব্যবসা। কর্তৃপক্ষ কোন নজর না দেওয়ার কারণে তার দেখাদেখি আবার অনেকেই সড়কের আশেপাশের জায়গা দখল করে গড়ে তুলেছে ছোট-বড় বিভিন্ন রকমের দোকানসহ খাবারের হোটেল। আইনের নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে নিজের পৈতৃক সম্পত্তি ভেবে অবাধে ব্যবসা বাণিজ্য করে যাচ্ছে শহিদুলসহ অন্যান্যরা।
আবার কৌশলে দখল করেও সে প্রভাবশালী ব্যক্তির দাপটে বড় গলায় কথা বলে বেড়াচ্ছেন। এতে করে ব্যক্তির ক্ষমতার কাছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অসহায়ত্ব বলে মন্তব্য করছেন অনেকে। আবার কেউ কেউ কর্তৃপক্ষের নিরব ভূমিকা পালন করায় সন্দেহ প্রকাশ করছেন। তাই কর্তৃপক্ষ দ্রুত পদক্ষেপ নিবেন এমনটাই দাবি সচেতন মহলের।
নওগাঁ বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, সরেজমিনে সেখানে গিয়েছিলাম। অনেক পূর্বে গাছগুলো কাটা হয়েছে। এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নিয়েছেন কিনা জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, এক্ষেত্রে অনেক দেরি হয়ে গেছে। তবে নতুন করে কেউ যদি গাছ কাটে তাহলে একটা পদক্ষেপ নিতে পারি।
নওগাঁ সড়ক ও জনপথের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী
আহসান হাবীব বলেন, সরেজমিনে সেখানে লোক গিয়েছিল। তার বিরুদ্ধে একটা নোটিশ করা হয়েছে। উর্ধতন কর্তপক্ষসহ ডিসি বরাবর নোটিশ পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
নওগাঁর বিভিন্ন জায়গায় এমন অবস্থা। বিশেষ করে আমাদের নিজস্ব মাজিস্ট্রেট না থাকায় একটু বিলম্ব হয়। তবে খুব দ্রুত একটা আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। রাস্তার গাছ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন গাছ রোপন করতে পারে। তবে কাটার অনুমতি নেই।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।